সহীহ হাদীসের আলোকে ইকামতে দ্বীন বিরোধী, মাথায় রুমাল ব্যবহারকারীদের প্রকৃত পরিচয় Rumal

 

ইদানিং এক শ্রেণীর লোক মাথায় রুমাল পড়ে, ঘোমটা দিয়ে ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা করছে। ইকামতে দ্বীনের কাজকে তারা 'ক্ষমতা দখল', 'গদি দখল', 'ক্ষমতায় যাওয়ার চালাকি', 'ক্ষমতালোভী' ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করছে। এভাবে তারা শুধু ইকামতে দ্বীনের মুজাহিদের সাথেই নয় বরং খোলাফায়ে রাশেদা ও নবী-রাসূলগণের সাথেও ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে কুফুরী করছে। মূলত তারা চায়, কিয়ামত পর্যন্ত যেন তাদের প্রভূরা ক্ষমতায় থেকে তাগুতী শাসনব্যবস্থা জারী রাখতে পারে। এভাবে তারা ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ)-কেও ক্ষমতালোভী বলে ফতোয়াবাজী করবে। কারণ ইহুদীদের মত তারা তাদের মহান(?) প্রভূ দাজ্জালেরও অনুসরণ করবে।

.
১. আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
يَتْبَعُ الدَّجَّالَ مِنْ يَهُودِ أَصْبَهَانَ سَبْعُونَ أَلْفًا عَلَيْهِمْ الطَّيَالِسَةُ-
"৭০ হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে, যাদের মাথায় রুমাল থাকবে। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ফিতান ৪/২২৬৬, হাঃ ২৯৪৪)
২. আবূ ‘ইমরান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
َنَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَرَأَى طَيَالِسَةً فَقَالَ كَأَنَّهُمْ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ-
কোন এক জুমু‘আহর দিনে (মসজিদের মধ্যে) আনাস (রাঃ) লোকজনের দিকে দৃষ্টিপাত করেন। তিনি অনেকের মাথায় চাদর (রূমাল) দেখতে পান। তখন তিনি বললেন, এরা ঠিক খাইবারের ইহূদীদের মতো। (সহীহ বুখারী, কিতাবুল মাগাযী ৪/১৫৪২, হাঃ ৪২০৮)
৩. আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
ما أشبهت الناس اليوم في المسجد وكثرة الطيالسة إلا بيهود خيبر-
"আজকাল মসজিদে মানুষদের বেশি বেশি মাথায় রুমাল পরিহিত দেখে অবিকল খায়বারের ইহদীদের মত মনে হচ্ছে।" (সনদ সহীহ, মুসতাদরাক হাকীম ৪/২১১)
৪. আবু মূসা আশ'আরী (রা) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) লোকমান হাকীমের বরাতে বলেন,
يا بني إياك والتقنع فإنه مخوفة بالليل مذلة أو مذمة بالنهار-
"হে বৎস, খবরদার! মাথায় রুমাল ব্যবহার পরিহার করবে, কখনো তা ব্যবহার করবে না; কারণ রাত্রে মাথায় রুমাল ব্যবহার ভীতি উদ্রেককারী আর দিবসে তা (ইহুদী অনুকরণ হওয়ায়) লাঞ্ছনার কারণ।" (সনদ সহীহ, মুসান্নাফে ইবনু আবী শাইবা ৫/২৯২; মুসতাদরাক হাকীম ২/৪৪৬)
.
উপরোক্ত সহীহ হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণিত যে, 'সহীহ' লকবধারীরা সহীহ হাদীসের অনুসারী নয় বরং নেক সুরতে ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা করে দাজ্জালের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য ফতোয়াবাজী করছে। সুতরাং এসব ঘোমটা ওয়ালা দরবারী আলেমদের বয়কট করে ইকামতে দ্বীনের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা ঈমানের দাবী। কেননা, সকল বাতিল (দ্বীন) বিধানের উপর আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তাঁর রাসূল (সাঃ) কে প্রেরণ করেছিলেন। (দেখুনঃ সূরা তাওবা :০৯/৩৩; ফাতাহ :৪৮/২৮; সূরা সফ :৬১/০৯)

No comments:

Post a Comment

‘ তোমরা আমার ভাইকে হত্যা করতে পারবে না।‘ - ইয়াজিদের রাজদরবারে ইমাম হোসাইনের বোন হযরত যায়নাব

‘ কারবালার দু’ পীঠ আছে। একটি আলোকময় আর একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন। ইমাম হোসাইন (আ.) সত্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য সাথিগণসহ কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছেন। এটি আলোকময় দিক । ইয়াযীদের দল সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে ক্ষণিকের জন্য বাহ্যিকভাবে বিজয়ী হলেও এ দিকটি হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন। সারা বিশ্বের মানুষ তাদের ঘৃণার সাথে স্মরণ এবং অভিসম্পাত করে । ইমাম হোসাইন ও তার সাথিগণকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। ইমাম হোসাইন (আ.) শাহাদাতের পর আরও বেশি জীবন্ত হয়ে উঠেছেন। ইয়াযীদের দল তাকে শহীদ করে ভেবেছিল সব কিছু মিটে গেল। কিন্তু জীবিত হোসাইন হতে মৃত হোসাইন আরও বেশি মারাত্মক হয়ে তাদের পতনকে আর ত্বরান্বিত করে দিয়েছেন। অনুভূতিসম্পন্ন প্রতিটি মানবের মণিকোঠায় তিনি জীবন্ত থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার উদ্যম যোগাচ্ছেন। তার বোন হযরত যায়নাব (আ.) সত্যিই বলেছেন-‘ তোমরা আমার ভাইকে হত্যা করতে পারবে না।‘ ইমাম হোসাইন (আ.) -এর শাহাদাতের ফলে ইয়াযিদী ইসলামের বিরুদ্ধে মুহাম্মাদী ইসলামের আত্মিক ও বাস্তব উভয় প্রকার বিজয় সংঘটিত হয়েছিল । - মাওলানা মোহাম্মদ কুতুবউদ্দীন হোসাইনী চিশতী